Datasets:
document_id
stringlengths 36
36
| text
stringlengths 253
70.2k
|
---|---|
0bff109f-eedc-43cc-a83b-3c0ff0dca67b | দেড় কোটি টাকা ফেরত চাওয়ায় বিয়ানীবাজারের ব্যবসায়ী খুন
সপরিবারে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন ব্যবসায়ী সইবন আহমদ (৫০)। তাকে সপরিবারে আমেরিকায় পাঠানোর জন্য দেড় কোটি টাকা নেন সিলেট শহরের গাড়ি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। কিন্তু জানুয়ারি মাসে আমেরিকায় পাঠানোর মেয়াদ অতিবাহিত হলে টাকার জন্য জাকিরকে চাপ দেন সইবন।
বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) টাকা ফেরত প্রদানের জন্য তাকে সিলেট শহরে ফোন করে নেয়া হয়। টাকা আনতে আমেরিকা যাওয়ার বদলে তাকে চিরতরে পরপারে পাঠিয়ে দেয় ঘাতকরা। এমন তথ্য জানান বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল মুন্সী। তার দাবি, সইবন হত্যাকাণ্ডে ঢাকার এক আদম ব্যবসায়ীও জড়িত রয়েছেন।
এদিকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে বিয়ানীবাজার উপজেলার খশির সড়কভাংনী এলাকায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ সিলেটের আখালিয়া এলাকার সামছ উদ্দিনের বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মাইক্রো (নং ঢাকা মেট্রো-চ-১৫-৫১১৯) জব্দ করে। গ্রেপ্তারকৃত জাকির সামছ উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশের দাবি, ওই মাইক্রোতে করে নিহত সইবনের মরদেহ বিয়ানীবাজারের গাছতলা এলাকায় এনে ফেলে দেয়া হয়েছে। জব্দ করা ওই মাইক্রোতে রক্তের জমাট বাঁধা চিহ্ন রয়েছে।
অপরদিকে ব্যবসায়ী সইবন হত্যায় পুলিশ জাকিরের শাশুড়ি সুলতানা (৪৭), স্ত্রী রিপা (২৬) ও পিতা সামছ উদ্দিনকে (৬০) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক জানান, গ্রেপ্তারকৃত জাকির এবং নিহত ব্যবসায়ী সইবনের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে তাদের মধ্যে আমেরিকা পাঠানোর চুক্তি হয়। হত্যাকাণ্ডে পেশাদার খুনিরা জড়িত বলে তিনি জানান।
নিহতের ভাগ্নে নুরুজ্জামান জানান, আমার মামা সইবন আহমদের পরিবার সহ আরও বেশ কয়েকটি পরিবারকে আমেরিকা পাঠানোর জন্য জাকিরকে টাকা দেয়া হয়। টাকার পরিমাণ দেড় কোটি টাকার উপরে হবে। তিনি বলেন, আমেরিকা যাওয়ার জন্য নির্ধারিত টাকায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর কিছু টাকা অগ্রিম নেয়া হত। এভাবে বেশ কয়েকটি পরিবারের কাছ থেকে নেয়া অগ্রিম টাকার পুরোটাই জাকিরের হাতে তুলে দেয়া হয়।
নুরুজ্জামান দাবি করেন, জাকির গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের পাশাপাশি পার্টসের ব্যবসাও করে। সিলেট নগরীর দরগা গেইটে তার একটি নিজস্ব গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের দোকান আছে। তিনি বলেন, আমেরিকান দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তার সাথে জাকিরের যোগাযোগ আছে বলে সে গল্পগুজব করতো। তবে জাকিরের শ্বশুর আফতাব আলী আমেরিকায় বৈধভাবে বসবাস করেন। তিনিও নাকি আমেরিকায় লোক নেয়ার ব্যবসায় জড়িত আছেন।
তদন্ত সূত্র জানায়, টাকা ফেরত পাওয়ার কথা শুনে সইবন আহমদ একটি ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে বৃহস্পতিবার সিলেট পৌঁছান। বিকাল ৪টার দিকে তিনি বিয়ানীবাজার শহর থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের গাছতলা এলাকা থেকে পৌরশহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী সইবন আহমদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তি বড়লেখা উপজেলার ইটাউরী গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে। তিনি বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের দাসগ্রাম এলাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। এখানকার জামান প্লাজায় আবরণী ফ্যাশন নামক দুটি কাপড়ের দোকান রয়েছে তার।
এদিকে ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার (২৮ এপ্রিল) বিয়ানীবাজার পৌরশহরে মানববন্ধন ও শোকযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসেবে তিনটি বিপণী বিতান বন্ধ রাখা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। |
d03f1220-d888-4b31-b65c-31b53f2eba0b | বিশ্বকাপ উন্মাদনায় ভাসছে সিলেট
বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর শুরু হতে বাকি মাত্র ১৯ দিন। এরপরই ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ হিসেবে পরিচিত ফুটবলের বিশ্ব লড়াই শুরু হবে সুদূর রাশিয়ায়। অবশ্য এর আগেই বিশ্বকাপের দেশ রাশিয়ার থেকে সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ বাংলাদেশ মেতেছে বিশ্বকাপ উৎসবে; সঙ্গী হয়েছে উত্তেজনা।
ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী দেশের মতো বাংলাদেশেও ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা, উন্মাদনা আর আগ্রহ সীমাহীন। হাজার মাইল দূরের খেলাগুলো টিভিতে দেখার অপেক্ষায় দেশের কোটি মানুষ সাথে সিলেটে লাখো সমর্থক।
লাল-হলুদ কার্ড, ফাউল-পেনাল্টি, কর্নার-অফসাইড আর হার-জিত নিয়ে মাঠে যেমন উত্তেজনা থাকবে ঠিক যারা টিভিতে খেলা দেখবে তাদের মধ্যেও কম উত্তেজনা থাকবে না। প্রিয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়ে আনন্দিত হতে যাচ্ছে সিলেটের সমর্থক-ভক্তরা। বিশ্বকাপ নিয়ে সমর্থকদের কেউ কেউ মেতেছেন তর্ক যুদ্ধে।
ইতোমধ্যে সিলেট নগরী ও তার আশেপাশের এলাকার সমর্থকরা কিনতে শুরু করেছেন যার যার পছন্দের দেশের পতাকা। আবার কেউ কেউ এরই মধ্যে নিজেদের বাসাবাড়ির ছাদে লাগিয়ে দিয়েছেন বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশে পতাকা। এদিকে নিজ দলকে সমর্থন জানানোর জন্য শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ফুটবলপ্রেমীরা।
পতাকার সাথে সাথে অনেকেই কিনছেন তার পছন্দের দলের জার্সি। তেমনি একজন খায়রুল আলম। তিনি আর্জেন্টাইন সমর্থক। প্রিয় দলের জার্সি কেনার সময় কথা হয় তাঁর সাথে। তিনি বলেন, এইমাত্র আর্জেন্টিনা দলের পতাকা ১৫০ টাকা দিয়ে কিনলাম। এখন এসেছি প্রিয় এ দলের জার্সি কিনতে।
তিনি বলেন, প্রিয় দলের জার্সি পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকার মধ্যে। এজন্য যার যেমন বাজেট, তেমনই কিনতে পারছেন সকলে।
এদিকে বন্দরবাজারে বাবার সাথে পতাকা কিনতে আসা ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া ব্রাজিলের ক্ষুদে সমর্থক রাহুল পাল বলে, আমি ব্রাজিল দলের সাপোর্টার। আমি বাবার সাথে ব্রাজিলের সবচেয়ে সুন্দর পতাকাটা কিনতে এসেছি। সে তার মনের দৃঢ় বিশ্বাস থেকে বলে উঠে এবার আমার ব্রাজিলই চ্যাম্পিয়ন হবে।
এমন সমর্থকদের এ আনন্দকে আরো বাড়িয়ে তুলতে বন্দর বাজারের নির্ধারিত স্থান থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লার অলিগলিতে পতাকা ফেরি করছেন বিক্রেতারা। হকাররা হাঁক দিয়ে বিক্রি করছেন বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণকারী দল গুলোর পতাকা।
সিলেটের নগরীর বন্দর পয়েন্টে পতাকা বিক্রেতা এজাজ মিয়া জানান, আমি অনেক বছর ধরেই এ ব্যবসা করে আসছি। সব মৌসুমেই আমি পতাকা বিক্রি করি। তবে ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে প্রত্যেক বারই পতাকা বিক্রি বাড়ে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ পিস পতাকা বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা। এদিকে বন্দরের হকার মার্কেট এলাকায় পতাকা তৈরির কাজও চলছে সমান তালে। কাইয়ুম নামের এক দর্জির দোকানী জানান, প্রতিদিন কত পতাকা বানাচ্ছি, তার সঠিক হিসাব দেয়া সম্ভব নয়। একদিকে বানাচ্ছি। আর অন্য দিকে বিক্রি করছি। যেমন বিক্রি হচ্ছে শহরে তার থেকেও বেশি যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলে।
অন্য এক ব্যবসায়ী মোতালিব মিয়া বলেন, এখন দোকানে বিক্রির জন্য ছোট পতাকা বানাতে ব্যস্ত আমরা। তবে গ্রাহকদের অর্ডার অনুযায়ী বড় মাপের পতাকাও তৈরি করছি।
তিনি আরো জানান, ভালই ব্যবসা হচ্ছে। প্রত্যেকদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পতাকা বিক্রি করতে পারছি।
এছাড়াও ইতিমধ্যে প্রিয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে জড়িয়ে পথে বেড়োতে শুরু করেছেন অসংখ্য সমর্থক। প্রিয় ফুটবল দলের সমর্থন নিয়ে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে প্রীতি-বিভক্তি। চলছে খেলা উপভোগের জন্য রাত জেগে অপেক্ষা আর বিশ্লেষণ।
এদিকে বিশ্বকাপ ফুটবলের কারণে ওয়েব দুনিয়াতেও বেড়েছে বাড়তি উত্তেজনা। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকরা তৈরি করেছেন অসংখ্য গ্রুপ আর পেজ। পেজগুলোতে দেয়া হচ্ছে নিয়মিত আপডেটও। জানিয়ে দেয়া হচ্ছে দলগুলোর নানা ধরনের খবরা খবর। পোস্ট করা হচ্ছে ছবি।
শুধু পতাকা ও জার্সির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই নগরীর ফুটবলপ্রেমীরা। ফুটবল খেলা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সরাসরি উপভোগ করার জন্য অনেকে টেলিভিশন ক্রয় ও মেরামত করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ফুটবল বিশ্বকাপে নিজের দেশ না খেললেও প্রিয় দলকে সমর্থনে কোন সমর্থই রাখছেন না কমতি। |
e1f4091c-da4f-4216-b365-ab0fc8c61df4 | উন্নয়নের স্বার্থে টেবিল ঘড়িতে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন : এড. জুবায়ের
আসন্ন সিলেট সিটি নির্বাচনে সিলেট নাগরিক ফোরাম মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন- আমাদের আবেগ অনুভুতির পুরোটা জুড়েই পূণ্যভুমি সিলেট। সৌহাদ্র সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্ঠান্ত সিলেটে ৩০ জুলাই নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবেনা। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পেছনে সিলেটবাসীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী হয়েও সিলেট বিভিন্ন দিক থেকে আজো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তার কেবলই সৎ,যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্বের অভাবেই। দীর্ঘ মেয়াদী মহাপরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে সিলেটকে শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা মজলুম, আমাদের উপর নির্যাতনের স্টীম রোলার চালানো হয়েছে। তবুও আমরা ইনসাফ ও নীতি থেকে একচুলও সরে যাইনি। ৩০ জুলাই নির্বাচনে মজলুমের পক্ষে, ইনসাফ ও উন্নয়নের প্রতীক টেবিল ঘড়িতে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। আমাদের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র হলে দাতঁ ভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
তিনি শনিবার আসন্ন সিসিক নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি মার্কার সমর্থনে নগরীর ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে সর্বশেষ নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
সিলেট নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব মো: ফখরুল ইসলাম ও মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ড. মোবারক হোসাইন, লেবারপার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সিলেট মহানগর সভাপতি মাহবুবুর রহমান খালেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা জহুরুল হক, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও জেলা দক্ষিণের আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, ২০ দলীয় জোট সিলেট মহানগর সদস্য সচিব ও এডভোকেট জুবায়েরের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাফিজ আব্দুল হাই হারুন, এনডিপি জেলা সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, জাগপার মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহজাহান আহমদ লিটন, নেজামে ইসলাম পার্টি জেলা সভাপতি ক্বারী আবু ইউসুফ চৌধুরী, বিজেপি জেলা সদস্য সচিব ডা: একেএম নুরুল আম্বিয়া, ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা: হাবীবুর রহমান, ২০ দলীয় জোট সিলেট জেলা সদস্য সচিব ও সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, সিলেট জেলা উত্তরের সেক্রেটারী মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল সালাম আল মাদানী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শাকুর, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদক জামশেদ আলম সরকার ও সিলেট মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন- সিলেট নগরীতে পরিবর্তনের স্লোগান উঠেছে। এই পরিবর্তন সৎ, যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্বের পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে নগরবাসী একজন প্রকৃত খাদেম পাবেন। যার নেতৃত্বে সিলেট হবে বিশ্বমানের নগরী।
জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন- সিলেট হচ্ছে সকল সফল আন্দোলনের সুতিকাগার। এখানে অতীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নামকরণ বিরোধী আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলনে সিলেটবাসীর রয়েছে গৌরবোজ্জল ভুমিকা। আপনাদের সামনে আরো একটি আন্দোলন এসেছে আর সেটা হচ্ছে ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে মজলুমের পক্ষে সৎ, যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্ব এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে টেবিল ঘড়ি মার্কায় বিজয়ী করার আন্দোলন। সিলেটে তারাই বিজয়ী হওয়ার অধিকার রাখে, যারা পুলিশ-গুলীকে ভয় না করে নিজেদের ভোটকেন্দ্র রক্ষায় জীবন দিতে পারে। ৩০ জুলাই সিলেটবাসী জীবন দিয়ে হলেও নিজেদের অধিকার রক্ষা করবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ড. মোবারক হোসাইন বলেন- বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ পুর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সফল কেন্দ্রীয় সভাপতি, সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের রুপকার এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে সিলেট সিটিতে মেয়র পদে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সুর্যোদয় হবে। আর টেবিল ঘড়ির বিজয় নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হলে ছাত্র সমাজকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। |
e99907b4-ec62-4d4b-aeeb-95dfb75b4caa | সকল অন্যায়ের বিচারের ভার নগরবাসীকেই দিলাম: আরিফ
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, ‘সিলেট নগরের মানুষের প্রতি আমার অগাধ আস্থা। তারা যে কাউকে যেমন বুকে টেনে নিতে পারেন তেমনি আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে দিতে পারেন। গত ৫ বছর আমার ওপর যে অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে এবং আমার কর্মীদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে তার বিচারের ভার আমি নগরবাসীর ওপরই ছেড়ে দিলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনকে বানচাল করা যাবে না। সিলেটের মানুষ অন্যায় সহ্য করে না। আপামর জনতা যদি ষড়যন্ত্রের বিষয় টের পেয়ে যায় তবে ষড়যন্ত্রকারীরা পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।’ তিনি প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার আহবান জানান।
শনিবার (২৮ জুলাই) সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শেষ দিনের গণসংযোগে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১১টায় তিনি নগরীর ঝেরঝেরিপাড়া এবং মিরাবাজার আবাসিক এলাকায় গণসংযোগ করেন। এসময় বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ স্বত:ষ্ফ’র্তভাবে অংশ গ্রহণ করেন।
নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে সদ্যবিদায়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার কর্মী সমর্থক প্রচার চালাতে পারছে না। তারা বাড়ি ঘরে থাকতে পারছে না। এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’ এ অবস্থায় নগরবাসীকে সোচ্চার ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই নগরের মানুষই আমার বড় ভরসা। পুণ্যভুমি সিলেটে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না এখানকার মানুষ এ বিশ্বাস আমার আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি নোংরামি পছন্দ করি না, অপপ্রচারে বিশ্বাস করি না। যারা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব বলছে তাদেরকে ব্যালেটের মাধ্যমে নগরবাসী সমুচিত জবাব দেবেন বলে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি।’
আরিফুল হক চৌধুরী আরো বলেন, দয়া করে সিলেটের মাটিকে কলংকিত করার চেষ্টা করবেন না। হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহজালাল (রহ.) এর পূণ্যভূমি সিলেটে অন্যায় করে ধ্বংস হয়ে গেছে এমন উদাহরণ ভুরিভুরি আছে। এ পূণ্যভূমি অন্যায়, অবিচার কখনো সহ্য করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। তারপরও কেউ যদি কোনো অপচেষ্টা চালালে তার পরিণতি কোনভাবেই শুভ হবে না। এই নগরীর মানুষের আবেগ-অনুভূতি নিয়ে খেলা করার চেষ্টা করবে না। একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুন, আপনারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।’ আরিফুল হক চৌধুরী সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় সচেতন থাকার জন্য সকল শ্রেণি পেশার মানুষের প্রতি আহবান জানান।
দুপুরে আরিফুল হক চৌধুরী দরগাহ মাদরাসায় আলেম উলামা এবং মাদরাসার ছাত্রদের সাথে একটি মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন। দরগাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবুল কালাম যাকারিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আরিফুল হক চৌধুরী। সাবেক এমপি মাওলানা এডভোকেট শাহিনূর পাশা চৌধুরীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আলেম উলামার সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক। আলেম উলামাদেরকে আমি অনেক ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। তারা ও আমাকে অনেক ভালোবাসেন। তাঁদের দোয়ার বরকতে আল্লাহ আমাকে একবার কাউন্সিলর এবং একবার মেয়র হিসেবে বিজয়ী করেছেন। বিভিন্ন সময়ে তারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
মতবিনিময় সভায় আরিফুল হক চৌধুরীর জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন মাদরাসার মুহাদ্দিস মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী।
আরিফুল হকের প্রচার সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নগরীর ঝেরঝেরিপাড়া ও মিরাবাজার এলাকায় গণসংযোগকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, মহানগর খেলাফত মজলিস-এর সহ সভাপতি আব্দুল হান্নান তাপাদার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সিলেট জেলার সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুর রহমান, আম্বরখানা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কুতুবুর রহমান চৌধুরী, করিমুল্লাহ মার্কেটের সাবেক সভাপতি ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক কাওছার আহমদ।
এছাড়া গণসংযোগকালে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট এবং অঙ্গ সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। |
34265519-977e-4141-8f58-db18202d2bf8 | রাত পোহালেই ৩ সিটিতে ভোট
রাজশাহী বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও বলছে নানা শঙ্কার কথা। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগেরও অন্ত নেই। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। দিন শেষে রাত পোহালেই সোমবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে।
তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে উত্তেজনা আছে। খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ‘অভিজ্ঞতায়’ ভোট কারচুপির শঙ্কা করছেন বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রার্থীরা। গ্রেফতার, হয়রানি, ভয়ভীতি দেখানোর ও অভিযোগ করেছে বিএনপির প্রার্থীরা। শনিবার প্রচারনার শেষ দিনে বরিশালে বিএনপি প্রার্থীদের মাঠে নামতেই দেয়নি প্রশাসন, এমন অভিযোগও রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সব প্রত্যাখ্যান করে বলছে, ভোট উৎসব হবে নগরে। জনগণ ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে।
সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি এখন তিন সিটি নির্বাচনের দিকে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এ নির্বাচনগুলো কেমন হয়, তা নিয়ে নানা রকম আলোচনা আছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে সংসদ নির্বাচনের আগে এটি দুই দলের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পরীক্ষাও হতে পারে। বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, তা এ নির্বাচনের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে। পশ্চিমা দেশ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও দাতা দেশগুলো তিন সিটির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি বলতে গেলে ইতোমধ্যে শেষ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শনিবার থেকে তিন সিটিতে ৪৪ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মাঠে নেমেছে। শহরগুলোর সর্বত্র চলছে র্যাবের টহল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে গণসংযোগ। যানবাহন চলাচলের ওপর আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ। আগামীকাল নির্বাচনী এলাকায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনী সামগ্রী আনার কাজও প্রায় শেষ। আজ হবে বিলিবণ্টন।
নির্বাচনী মাঠ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, নির্বাচনে জয়ী হতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শেষ মুহূর্তের রণকৌশল তৈরিতে ব্যস্ত। তিন সিটিতে বিগত নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। এবার সবকটিতে জিততে মরিয়া আওয়ামী লীগ। বিএনপি জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকতে চায়। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কথা বলছেন তারা।
বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন তথ্যের ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে গুজব ছড়ানোর দায়ে আইসিটি আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে। সিলেটে নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কামরানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া।
ভোটের আগে আর নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হলে থানা এবং ভোটের দিন কেন্দ্র ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
বরিশালে বিএনপি প্রার্থী মজিবুর রহমান সরোয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগে ঈদের খুশির মতো নির্বাচন হতো, এখন চোখের জলে নির্বাচন হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাছ চৌধুরী দুলাল বলেন, এই নির্বাচন ঘিরে নগরীতে উৎসব কাজ করছে।
নানা ঘটনা-রটনার মধ্য দিয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীদের ১৮ দিনের নির্বাচনী প্রচার শেষ হয় গতকাল। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টার আগে থেকেই বন্ধ থাকবে সবধরনের প্রচার ও সভা-সমাবেশ। সে হিসেবে গতকাল ছিল নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন। আর শেষ দিনেই প্রচারে মুখর ছিল তিন মহানগর। অলিগলিতে বেজেছে প্রচার মাইক। মেয়র-কাউন্সিলরপ্রার্থীদের কর্মীরা সকাল থেকেই লিফলেট হাতে নামেন রাস্তায়। সব দলের প্রার্থী এদিন ব্যাপক শোডাউন করেছেন। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করেছে দলগুলো।
বরিশালে আওয়ামী লীগের গণমিছিল, মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি: গতকাল শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ছিল প্রার্থীদের প্রচারের সুযোগ। শেষ দিনে সাত মেয়রপ্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দুই মেয়রপ্রার্থী পরিকল্পনা করে ভোটার আকৃষ্টের। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে নগরীর ৩০ ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হয় সর্বশেষ উঠান বৈঠক স্থল নগরীর ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে।
অন্যদিকে বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বর থেকে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। এ ঘটনায় ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে সমালোচনা করে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার আমাদের সময়কে বলেন, বর্তমান ইসি নির্বাচনের নামে তামাশা করছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা ছাড়া দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
কামরানের পক্ষে এমপি এহিয়ার গণসংযোগ: সিলেটে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কামরানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া। শনিবার বেলা ১টার দিকে নগরীর তালতলা এলাকায় কামরানের পক্ষে লিফলেট বিলি করতে তাকে দেখা যায়। এ সময় তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলার আহ্বায়ক এটিইউ তাজ রহমান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য উছমান আলী চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সিলেট নগরীর একটি হোটেলে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের অংশ নিয়ে দলের পক্ষ থেকে কামরানকে সমর্থনের কথা জানান তিনি।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে জানতে চাইলে এহিয়া জানান, আমি দলের পক্ষ থেকে বদরউদ্দিন আহমেদকে সমর্থন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। সেখান থেকে বের হলে কর্মীরা আমার হাতে কয়েকটি লিফলেট দিয়ে বিলি করার অনুরোধ করেন। তখন আমি কয়েক জনের হাতে লিফলেট তুলে প্রচারের উদ্বোধন করে দিই। তিনি বলেন, আমি এমপি হিসেবে লিফলেট বিতরণ করিনি এবং সংবাদ সম্মেলন করিনি। আমি মহানগর জাপার আহ্বাক হিসেবে দুটি লিফলেট ভোটারদের হাতে দিয়েছি।
নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা জানান, নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী সংসদ সদস্য এবং সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কোনো সংসদ সদস্য নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এর আগেও দুইজন সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিকে শোকজ করা হয়েছিল।
রাজশাহীতে আইসিটি আইনে দুই মামলা
বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন তথ্য দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গুজব ছড়ানোর দায়ে দুটি মামলা করা হয়েছে। বোয়লিয়া থানায় দায়ের করা মামলা দুটির বাদী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার রাতে দায়ের করা দুটি মামলার একটিতে আসামি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পাথরঘাটা শাখার সভাপতি হাসান আল বাকের মেসাল এবং অপর মামলার আসামি বদিউজ্জামান সাহেদ।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমানুল্লাহ জানান, মামলার আবেদন দুটি তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে নির্বাচনী আইনে মামলা রেকর্ডের প্রস্তুতি চলছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশালে সবার দৃষ্টি ১১ ইভিএম কেন্দ্রে
নির্বাচনে ৪টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে ওই ১১ কেন্দ্রের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। আর ওই ১১টি ভোটকেন্দ্রের প্রতি যেমন সবার দৃষ্টি, তেমনি প্রথমবারের মতো নতুন পদ্ধতিতে ভোটপ্রদানের বিষয়টিকে ওই কেন্দ্রগুলোর ভোটারদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করছে।
বরিশাল সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রের দূরত্ব, ওয়ার্ডে শিক্ষিতের হারসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন এ ওয়ার্ডগুলোয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। |
f1bf7bca-6b80-47b1-bd5a-fd1b7b86d1ad | সিলেটে পাল্টে যাচ্ছে ভোটের সমীকরণ
সিলেট সিটি করপোরেশনে কাল ভোট। এরই মধ্যে ভোটের মাঠের নানা সমীকরণ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। দল-জোট ও রাজনৈতিক মহলে ভোটের সমীকরণ নিয়ে শেষ মুহূর্তেও নানা হিসাব-নিকাশ চলছে।
ভোট উৎসবের কথা বলা হলেও ভোটারদের চেয়ে প্রার্থী ও দলীয় কর্মীদের মধ্যেই তা বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটের মাঠে সরব হলেও ভোটাররা যেন নীরব। ভোটের হিসাব-নিকাশ নিয়ে কথা বলতেও তাঁরা সতর্ক।
সিলেটের রাজনৈতিক মহলের মতে, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সদ্য সাবেক মেয়র বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী ও সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মধ্যে। নির্বাচনের মাঠে নামার পর থেকেই তাঁরা দুজন প্রথমে দলীয় কোন্দল-বিভেদ দূর করা এবং জোটগত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা তৈরির চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা সফলও হয়েছেন।
• ‘সংখ্যালঘু’ ও শ্বশুরবাড়ি ফ্যাক্টর
• কামরানকে সমর্থন জাপা ও ইসলামি ঐক্যজোটের একাংশের
• অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনেরাও নির্বাচনে কামরানের পক্ষে মাঠে
• জামায়াত ও ইসলামি আন্দোলনের বাইরে হেফাজতের ভালো প্রভাব
রাজনৈতিক মহলের মতে, সিলেট সিটির গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল নিজ দলের একটি অংশের সমর্থন না পাওয়া। কথিত আছে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না। এবার আর সেই অবস্থা নেই। এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনেরা নির্বাচনে কামরানের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। দলের পক্ষ থেকে পাঁচ মনোনয়ন-প্রত্যাশীও কামরানের পক্ষে মাঠে আছেন। অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ কামরানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে সবাই একসঙ্গে মাঠে আছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, কামরানের নির্বাচনের বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ। এর মধ্যে আন্তরিকতারও ঘাটতি নেই।
গতকাল শনিবার মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছে কামরানকে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এ টি ইউ তাজ রহমান এই ঘোষণা দেন। সিলেট সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখানে জাতীয় পার্টি কোনো কার্যক্রমে ছিল না। ২০০১ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন গঠনের পর দুই মেয়াদে মেয়র প্রার্থী দিলেও এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোনো মেয়র প্রার্থী দেয়নি।
এদিকে ওই দিন বিকেলে মিজবাউর রহমান চৌধুরী নেতৃত্বাধীন ইসলামি ঐক্যজোট বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, দলটির আরেকাংশ রয়েছে আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে।
বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। দলের ‘উচ্চপর্যায়ের চাপে’ ১৯ জুলাই তিনি আরিফুলের সমর্থনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। অবশ্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত তারিখে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় ব্যালটে তাঁর নাম ও প্রতীক থাকছে। নির্বাচনে আরিফুল হককে সমর্থনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সিলেটের ভোটের মাঠে আর দেখা যাচ্ছে না সেলিমকে।
বদরুজ্জামান সেলিম সমর্থন করলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এখনো মাঠে আছেন। সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন। নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকে ভোটের মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নানা দেনদরবার হলেও তা সফল হয়নি। এটা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনাও রয়েছে। কথিত আছে, সরকারি দলের যোগসাজশে জামায়াত মাঠে রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে এসে ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমদ জামায়াতকে নির্বাচন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। এর জবাবে জামায়াতের প্রার্থী বলেন, ভোটের আগে বিএনপি প্রার্থী সরে দাঁড়াবেন বলে তাঁর আশা।
সিলেটে নিজেদের ভোটব্যাংক প্রসঙ্গে জামায়াত নেতাদের মূল্যায়ন হলো, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলে তাঁদের প্রার্থী ৫০ হাজারের বেশি ভোট পাবেন। আর বিএনপির নেতাদের ধারণা, জামায়াত যা-ই বলুক, দলটির ভোট ১৫ হাজার ছাড়াবে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের ধারণা, সিলেট শহরে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ হাজার ভোট রয়েছে জামায়াতের।
বিএনপির নেতারা বলছেন, সিলেট শহরের পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, দরগাহ মহল্লা, সোবহানীঘাট, মীরাবাজারসহ কিছু এলাকায় জামায়াতের প্রভাব রয়েছে। তবে দলটির বড় ভোটব্যাংক নেই। গত সিটি নির্বাচনে জামায়াতের চারজন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে জয়ী হন। এ অবস্থায় জামায়াত বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর ভোটে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে না। বরং বিএনপির একটি বড় অংশের বিশ্বাস, জামায়াত না থাকায় তাদের জন্য ভালো হয়েছে। সিলেটের প্রায় এক লাখ সংখ্যালঘু ভোটের একটি বড় অংশ আরিফুলের পক্ষে যাবে বলে তাদের ধারণা। জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকলে এই ভোটে প্রভাব পড়ত।
বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতের ভোটের দিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দৃষ্টি রয়েছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিএনপি ও জামায়াতের ভোট নিয়ে নানা অঙ্ক কষছেন। কারণ, জামায়াত ভালো ভোট পেলে তা বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হকের জন্য ঝুঁকি বাড়বে। এতে সুবিধা হবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের। এ ছাড়া সিলেটে জামায়াতের সঙ্গে কামরানের সুসম্পর্ক রয়েছে—সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন প্রচার রয়েছে।
অন্যদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী থাকায় তাদের ভোট অন্যদের বাক্স যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
প্রার্থীদের প্রচারে উৎসবের নগর এখন সিলেট। প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রার্থীদের প্রচারে উৎসবের নগর এখন সিলেট। প্রথম আলো ফাইল ছবি
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনকে বাদ দিলে এখানে হেফাজতের ভালো প্রভাব আছে বলে জানা গেছে। আগের কয়েকটি নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, আঞ্জুমানে আল ইসলাহ, খেলাফত মজলিশ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো সংগঠনের মোটামুটি প্রভাব আছে। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে এসব দলের ভোটের ভূমিকা ছিল বলে ধারণা করা হয়। এবারের নির্বাচনেও এসব ভোট বড় নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই এসব দলের ভোটারদের কাছে টানতে নেতাদের কাজে লাগাচ্ছেন প্রধান দুই প্রার্থী। সিলেটের পরিচিত ও প্রভাবশালী আলেম ও ইমামদেরও ভোটে কাজে লাগাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন কামরান-আরিফুল।
ফ্যাক্টর সংখ্যালঘু ভোট
সিলেটের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ ভোটারদের একটি বড় অংশ মনে করে, ভোটের লড়াইয়ে প্রায় এক লাখ সংখ্যালঘু ভোট একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এ বিষয় নিয়ে সচেতন এসব ভোটারও। তাঁরা প্রকাশ্যে কোনো কিছু না বললেও উন্নয়নের দিকে জোর দিচ্ছেন। শহরের মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরী রাজবাড়ী, শিবগঞ্জ, আম্বরখানা, মাছিমপুর মণিপুরীপাড়ায় বিভিন্ন শ্রেণির ‘সংখ্যালঘু’ ভোটারের সঙ্গ কথা বলে জানা গেছে, শ্মশানঘাট উন্নয়ন, মন্দির উন্নয়ন ও জননিরাপত্তার বিষয়ে যিনি অগ্রাধিকার দেবেন, তাঁরা তাঁকে ভোট দেবেন।
শ্বশুরবাড়ি ফ্যাক্টর
এবারের নির্বাচনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রায় ৪০-৪৫ হাজার ভোট বড় প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই এসব ভোটারকে নিজেদের পক্ষে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন দুই প্রার্থী। ধারণা করা হচ্ছে, এ ভোট ভাগাভাগি হবে প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা এই কারণকে ‘শ্বশুরবাড়ি ফ্যাক্টর’ হিসেবে মূল্যায়ন করছেন। কারণ, প্রধান দুই প্রার্থীর শ্বশুরবাড়ি বৃহত্তর এই অঞ্চলে। নিজেদের অঞ্চলের ভোটারদের স্বামীর পক্ষে টানতে সচেষ্ট রয়েছেন দুই প্রার্থীর স্ত্রী।
বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের স্ত্রী আসমা কামরানের বাবার বাড়ি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ময়তা গ্রামে। বাবার চাকরির সুবাদে ছোটবেলা থেকেই সিলেটে আছেন। আর আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামা হকের বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ শহরের নওমহালে। বিয়ের পর ১৯৯১ সাল থেকে সিলেটেই তাঁর বসবাস। সিলেটের প্রথম দুই নির্বাচনে এই ভোটব্যাংকের দখল ছিল কামরানের হাতে। গত নির্বাচনে আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী হয়ে সেই একচ্ছত্র ভোটব্যাংকে ভাগ বসান। এবারও এই ভোটের নিয়ন্ত্রণ নিতে দুই প্রার্থীর স্ত্রী মাঠে রয়েছেন।
ভোটের রাজনীতির বাইরে শঙ্কা
ভোটের রাজনীতির বাইরে শঙ্কা ভোটের পরিবেশ নিয়ে। ভোটারদের মূল ভয় পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে। ইতিমধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে চারটি মামলায় বিএনপির তিন শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা ঘরবাড়িছাড়া।
আরিফুল হক চৌধুরী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলেছেন। গত শুক্রবার রাতে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন, নির্বাচনের মাঠে যতই চাপ আসুক, হামলা-মামলা ও হুমকি আসুক, মাঠ ছাড়বেন না। দলীয় নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা প্রসঙ্গে আরিফুল হক বলেন, ‘সবাইকে এত হয়রানি করছেন কেন। আপনারা বললে আমি সবাইকে নিয়ে কারাগারে হাজির হয়ে যাব।’
নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি অতি উৎসাহী মহল কাজ করছে বলে আরিফুল হক মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, সরকারকেও স্যাবোটাজ করার চেষ্টা হচ্ছে। আরিফুল হক বলেন, স্থানীয় এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে জাতীয় নির্বাচনেও তার প্রভাব পড়বে। সেটা দেশের জন্য ভালো হবে না।
এ ধরনের শঙ্কার ভেতরেও মানুষের মধ্যে আশাবাদ রয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কথা বলে বোঝা গেল, সবাই চান শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। সম্প্রীতির শহর সিলেটের সম্প্রীতি নষ্ট হতে দিতে চান না তারা। সাধারণ মানুষ মনে করেন, স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হয়ে যাবে না। এখানে প্রধান যে দুই প্রার্থী তাঁর দুজনই নগরবাসীর পরিচিত। তাঁদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানেন। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নগরবাসীর ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত হোক, এটাই চান সবাই।
নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, জনগণই ভোটের প্রধান হিসাব-নিকাশ নির্ধারণ করেন। তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে জনপ্রিয় প্রতিনিধিই নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। প্রথম আলো |
ae66fc61-02a9-4b16-a9f8-83068b796880 | দুই বাংলায় আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিঁথি……..
রয়েল সিলেট ডেস্ক:: শ্রীকান্ত আচার্য, শান্তনু মৈত্র, কৌশিকী চক্রবর্তী, মোনালী ঠাকুর ও পণ্ডিত তন্ময় বোসের মতো সঙ্গীত বিশেষজ্ঞরা জি বাংলার সারে গামাপার বিচারক। বাংলাদেশের অবন্তী দেব সিঁথির গানে মুগ্ধ হয়ে সবাই আসন ছেড়ে দাড়ালেন। সিঁথি যা গাইতে পারেন তা শিষও বাজাতে পারেন। বিচারক প্যানেল এটি পরখ করতে বাশি বাজাতে বললেন একজনকে। বাশির সুরে গান সিথি অবলীলায় শিষ বাজিয়ে গেয়ে যাচ্ছিলেন। বাশিতে যে সুরই হচ্ছে সিথি শিষ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জ্বলে উঠল গীটার। অনুষ্ঠানের সোনালী মুহূর্তে রুপ নিল। বিচারকদের চোখ ছানাবড়া। একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছেন। একজন তো মঞ্চে এসে অভিবাদনই জানিয়ে গেলেন। পন্ডিত তন্ময় বোস সিঁথিকে নতুন নাম দেন ‘ শিষ পিয়া’। আরেক বিচারকের সাথে শিষের মাধ্যমে সাওয়াল জবাবও করেন। সেই বিচারক মুগ্ধ হয়ে বলেন,‘ শিষ পিয়া জিন্দাবাদ’।
দেশের বাইরে রিয়েলেটি শো প্রতিযোগিতায় এমন মুহূর্তকে ক্যারিয়ারের সেরা ঘটনাই মনে করছেন সিঁথি,‘ এটা আমার স্বল্প ক্যারিয়ারে অনেক বড় প্রাপ্তি। বিজ্ঞ বিচারকদের এমন ভালোবাসা আমাকে গানের প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল করে তুলেছে।’ জি বাংলায় সিঁথির অসাধারণ পারফরম্যান্সের পর দুই বাংলায় বেশ আলোড়ন পড়েছে। সিঁথির পারফরম্যান্সের ভিডিও লক্ষাধিকবার ভিউ হয়েছে। কলকাতার উদীয়মান শিল্পি শুভঙ্কর পান্ডা বলেন,‘ অবন্তীর পারফরম্যান্স দেখে কলকাতা শহরে অনেকেই এখন শিষ বাজানোর চেষ্টা করছে।’ সিথি এখন প্রতিযোগিতায় ৩২ জনের মধ্যে রয়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। বিজ্ঞান অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদের ল্যাবরেটরীতেই দিনের বেশি সময় চলে যায়। সিথি অবশ্য নিজেই পরীক্ষাগার বানিয়েছেন। সুরের সাথে কাপ ও শিষের দারুণ রসায়ন করেছেন। মিরপুরে সিথির বাসাই ছোটখাটো একটা ল্যাবরেটরীই। নানা রংয়ের কাপ ও সঙ্গীতের যন্ত্রপাতি।
জামালপুর মধ্যবিত্ত পরিবারে সিঁথির জন্ম। বাবা অদিত কুমার দেব জামালপুর জর্জ কোটে চাকরি করতেন। জামালপুর সরকারী বাংলোতেই সিঁথির শৈশব-কৈশোর কেটেছে। বাবা-মা ছিলেন সংস্কৃতিমনা। তিন বোনের মধ্যে সিথি মেঝ। পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য উৎসাহ দিতেন। সিঁথির বড় বোন সুশান্ত দেব কানুর কাছে গান শিখতেন। সিঁথিও যেতেন সাথে। ওস্তাদ সুশান্ত দেব কানু যখন বড় বোনকে গান শেখানোর সময়ই মৌলিক বিষয়গুলো রপ্ত করেন। বড় বোনের ভুলগুলো তিনিই শুধরে দিতেন। পরে এক সময় ওস্তাদ কানু সিঁথিকে গান তুলে দিয়ে বলতেন বড় বোনকে শেখাতে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক জামালপুরেই। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ছেলেদের শিষ শুনেছেন অনেক। ছেলেদের মনে না ধরলেও শিষ বেশ মনে ধরেছিল তার। সেই শিষকে বেশ সাধনার মাধ্যমে গানে ফুটিয়ে তুলেন। দুবাই, আমেরিকায় বাংলা প্রবাসীদের অনুষ্ঠানের কনসার্টে শিষ বাজিয়ে গান করেছেন।
সম্প্রতি শিষের সাথে কাপ সং যুক্ত করে নতুন ধারা এনেছেন। ইউটিউব থেকে কাপ সং রপ্ত করেছেন।
বাবার মৃত্যু ও আরো কিছু ঘটনায় ২০০৬ সালের পর কিছু দিন বিরতি ছিল গানে। ২০১০ এর পর থেকে আবার গানে সরব হন। ২০১২ সালে এনটিভি ক্লোজ আপ ওয়ানে সেরা দশে থাকার পরই মূলত আলোচনায় আসেন। টিভি শো, বিভিন্ন কনসার্টে নিয়মিত গান করে চলছেন।
রসায়ন বিভাগের বন্ধু জাহাঙ্গীর আলম খুব কাছ থেকে দেখছেন সিঁথিকে। তার দৃষ্টিতে বান্ধবী সিঁথি গায়িকা সিঁথির চেয়ে অনেক বড়,‘ ওর এতো জনপ্রিয়তা ও ভক্ত। কিন্তু ও খুবই সাধারণ। সময় পেলেই বন্ধু বান্ধবীদের সাথে আড্ডায় মাতে। বিন্দুমাত্র তারকাখ্যাতি ভর করে না ওর উপর। মুখে সব সময় হাসি লেগেই থাকে। ’ একই রকম মন্তব্য বান্ধবী কাজী সায়েমার,‘ ও খুবই পরিশ্রমী ও মেধাবী। পড়াশোনা, বাসা, গান, বন্ধুদের আড্ডা সবই করত। শুধু গানে নয় নাচেও দারুণ সিঁথি। ’ গানের মতো নাচে নিয়মিত নন সিঁথি। নাচটা পেশাদার নয়। ঘনিষ্ঠ কোনো অনুষ্ঠানে শখের বশেই নাচেন।
সোনরাগাও বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে শিক্ষকতা করতেন। জি বাংলার এই অনুষ্টানের জন্য শিক্ষকতা ছেড়েছেন। গান দিয়েই ভবিষ্যত করতে চান। ইউটিউব ও প্লে ব্যাক সঙ্গীতে তার ঝোক। |
2c6b262a-7b6d-4f9c-92de-0863d078262a | সোমবার টেক জায়ান্ট অ্যাপলের বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলন শুরু হয়েছিল চিরাচরিত কায়দায়। প্রথমেই বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক ও অন্য নির্বাহীরা। তাদের বক্তব্যেই নয়া কিছু সফটওয়্যার ও ফিচারের কথা উঠে আসে। তবে আইফোনের দিকেই ফোকাস ছিল বেশি। অ্যাপলের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রেইগ ফেডেরিঘি উন্মোচন করলেন অপারেটিং সিস্টেম আইওএস-এর ১২তম সংস্করণ। এই বছরের শেষ নাগাদ গ্রাহকরা এই সর্বশেষ সংস্করণের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন।
যেসব ডিভাইসে ইতিমধ্যে আইওএস ১১ চলছে, তারা বিনামূল্যেই আইওএস ১২-এ আপগ্রেড করে নিতে পারবেন।
ফেডেরিঘি বলেছেন, আইওএস ১২ আপগ্রেডে তাদের মূল নজর ছিল গতি (স্পিড) ও পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করার দিকে। তবে এর বাইরেও বেশ কয়েকটি নতুন ফিচার ও অ্যাপ এই আপগ্রেডে থাকবে বলে জানান তিনি। টাইম ম্যাগাজিনের এমন ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার বাছাই করেছে।
স্ক্রিনটাইম ও ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ মুড
অ্যাপলের নতুন স্ক্রিনটাইম অ্যাপে ব্যবহারকারী দেখতে পাবেন তিনি কত বেশি তার আইফোন ব্যবহার করেন। কোন অ্যাপ তিনি বেশি ব্যবহার করেন। তারা আরো দেখতে পাবেন, কোন অ্যাপের কারণে তারা ফোন হাতে নেন বেশি। কিছু বিশেষ অ্যাপ ব্যবহারের সময়সীমা বেঁধে দিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। পিতামাতাও সন্তানের জন্য এই সময়সীমা বেঁধে দিতে পারবেন। ফেডেরিঘি বলেন, ‘আমরা মনে করি এই ফিচার অনেক মানুষের জন্য উপকারী হবে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য। অনেক পরিবার একটা ভারসাম্য পাবে বলে মনে করি আমরা।’
আইফোনের নতুন ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ মুড চালু করলে রাতের বেলা বা কোনো বিশেষ জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নোটিফিকেশনের আওয়াজ বন্ধ থাকবে। এই দুইটি নতুন ফিচারকেই ভাবা হচ্ছে অতিমাত্রায় স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ নিরসনে অ্যাপলের পদক্ষেপ হিসেবে।
সিরি শর্টকাটস
নতুন সিরি শর্টকাটস অ্যাপের মাধ্যমে আইফোন ব্যবহারকারীরা নিজের মতো করে সিরি অ্যাপকে নির্দেশনা দিতে পারবেন। ধরুন, আপনি রাস্তার ট্রাফিক কেমন, সেই আপডেট জানাতে সিরিকে নির্দেশনা দিয়ে রাখলেন। অথবা আপনি চান, ‘সিরি, আই অ্যাম গোয়িং হোম’ বললেই যাতে আপনার প্রিয় গানটি বেজে উঠে। এই শর্টকাটগুলো আপনি রেখে দিতে পারবেন বারবার ব্যবহারের জন্য।
অ্যানিমোজি ও মেমোজি
নতুন আপগ্রেডে কোয়ালা, টি-রেক্স সহ বেশ কয়েকটি অ্যানিমেটেড অ্যানিমোজি থাকবে। এছাড়া ব্যবহারকারীরা নিজের মতো করেও অ্যানিমোজি বানাতে পারবেন। একে বলা হচ্ছে মেমোজি। এসব বার্তা আদান-প্রদানে ব্যবহার করা যাবে।
গ্রুপ ফেসটাইম
অ্যাপলের ফেইসটাইম অ্যাপে এই প্রথমবারের মতো একই সঙ্গে দুইজনের বেশি মানুষের সঙ্গে কথা বলা যাবে। একে বলা হচ্ছে ‘গ্রুপ ফেইসটাইম’। এই ফিচারের মাধ্যমে একই আলাপনে সর্বোচ্চ ৩২ জন থাকতে পারবেন। কথা বলার পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা মেমোজি ও অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করা যাবে।
মেজার
অ্যাপলের নতুন অ্যাপ মেজার-এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ফার্নিচার, ফ্রেম বা এই ধরনের জিনিসের আকার মাপতে পারবেন। যারা ঘরে-বাইরে বিভিন্ন টুল বা ছোট ছোট জিনিস বানাতে পছন্দ করেন, তাদের এই অ্যাপ কাজে লাগবে।
গুগল ম্যাপ ও ওয়েজ আসছে কারপ্লেতে
ব্যক্তিগত গাড়িতে ব্যবহার করতে অ্যাপলের রয়েছে নিজস্ব ইন্টারফেস। এর নাম কারপ্লে। গাড়িচালনার সময় এই ইন্টারফেস ব্যবহার করা যায়। প্রথমবারের মতো কারপ্লেতে এখন থেকে তৃতীয় পক্ষের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ যেমন গুগল ম্যাপ ও ওয়েজ ব্যবহার করা যাবে। |
2028482c-8e3a-48c2-afd5-10bdd222c804 | বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে জয় তুলে নিয়েছিল ২০০৯ সালে। এরপর অবশ্য বিদেশের মাটিতে হতাশাই হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গী। মাঝে এক দুটি জয় ও ড্র এলেও টেস্টে নিজেদের প্রমাণ করতে এখনো ব্যর্থ টাইগাররা। আগামী পাঁচ বছর আরো অনেক টেস্টই খেলতে হবে দেশের বাইরে। সেই মিশন শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে আজ প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে অ্যান্টিগাতে। প্রায় ১০ মাস পর বিদেশের মাটিতে সাদা পোশাকে মাঠে নামবে সাকিব আল হাসানের দল। শেষ সফরটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য সাকিবের জন্য অন্য অনুপ্রেরণার জায়গা। কারণ ২০০৯-এ প্রথম টেস্টেই দল থেকে ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। এরপর সাকিবই ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। তার হাত ধরেই এসেছিল ঐতিহাসিক সিরিজ জয়। এবারো অভিজ্ঞ দল নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় সাকিব। সেই সঙ্গে টাইগারদের নতুন কোচ স্টিভ রোডসের মিশন শুরু হচ্ছে টেস্টের কঠিন চ্যালেঞ্জ দিয়ে। দেশ ছাড়ার আগে কোচ অবশ্য ঘোষণা দিয়েছেন সিরিজ জয় দিয়েই শুরু করতে চান তিনি।
অ্যান্টিগায় প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটে বলে দারুণ করেছিল বাংলাদেশ দল। তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। সাকিবও ফিফটি হাঁকিয়েছেন। তবে এ সিরিজটি সাকিবের নেতৃত্বে চ্যালেঞ্জও। আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর আলোচনা-সামালোচনার ঝড় ওঠে তার নেতৃত্ব নিয়ে। তাই সাকিবের উপর আলাদা চোখ থাকবে বিসিবির। গত অক্টোবরে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সাকিব ছিলেন বিশ্রামে। ৬ মাস টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন না জানিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বিসিবির কাছে ছুটি চেয়েছিলেন। যদিও বিসিবি তাকে শুধু ওই সিরিজের জন্যই ছুটি মঞ্জুর করেছিল। এরপর দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ইনজুরির কারণে টেস্ট খেলতে পারেননি তিনি। সাকিব শেষ টেস্ট খেলেছেন সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। বলতে গেলে প্রায় ১১ মাস পর তিনি সাদা পোশাকে মাঠে নামবেন। সাকিব ছাড়াও দলে রয়েছেন স্পেশালিস্ট স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ক্যারিবীয়ান পেস সহায়ক উইকেটে দলের বড় শক্তি মোস্তাফিজুর রহমানই নেই। তিনি ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়েছেন দল থেকে। তবে বাকি চার পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি, শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা অবু জায়েদ রাহী প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ করেছেন। তাই তাদের উপর আস্থা রাখছে বাংলাদেশ দল। তবে আজ চার পেসার নিয়ে মাঠে নামবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। রাহীর অভিষেক হতে পারে বলেই জানা গেছে।
ব্যাটিংয়ে তামিম, সাকিব ছাড়াও মুশফিকুর রহীম, মমিনুল হক সৌরভ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদই দলের অন্যতম ভরসা। এ পাঁচজনকে দলের ব্যাটিংয়ের হাল ধরতে হবে। মুশফিকরা টেস্ট খেলার মধ্যে থাকলেও অধিনায়কের লম্বা বিরতি থেকে ফেরা কিছুটা হলেও প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও সাকিবের যোগ্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই টিম ম্যানেজমেন্টের। |
551e32a8-d7be-4c38-8ee4-7464f2e6da84 | দিনে টানা ১৪ ঘণ্টা কাজ। কখনো এর চেয়েও বেশি। অফিসে পদস্থ কর্মকর্তাকে খুশি করা চাই। বাড়ির কাজ সুনিপুণ হতে ‘শত হাতে’ কাজ করা চাই। পরীক্ষায় ভালো করতে বেশি বেশি পড়া চাই। এমন মাত্রাতিরিক্ত কাজ করতে করতে কেউ হাঁপিয়ে ওঠেন। কেউ অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কেউ উপায় খোঁজেন একটু দম ফেলার।
সেই উপায় খুঁজতে গিয়ে এমন কাজে ডুবে থাকা বা থাকতে বাধ্য হওয়া মানুষেরা অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে ‘জেলে’ ঢুকছেন। কথাটা শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও এমন ঘটনাই ঘটছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে কয়েদিদের মতো থাকার জন্য আলাদা কক্ষ আছে। সেই কক্ষ থাকে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ। আলাদা ইউনিফর্ম আছে। ফোনও নেওয়া যায় না। জেনে শুনে এমন যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে সেই ‘কারাগারে’ ঢুকছেন অনেকে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্ম আসক্ত মানুষদের জন্য দেশটির রাজধানী সিউল থেকে দুই ঘণ্টা দূরত্বে পাহাড়ি এলাকা হোংচিউনে কারাগারের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে অবসাদ ও দুশ্চিন্তা মুক্তি কেন্দ্র ‘প্রিজন ইনসাইড মি’। ২০০৮ সালে এটা চালু হওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মানুষ সেখানে থেকেছেন। এর মধ্যে অফিস কর্মী, গৃহবধূ, কলেজের শিক্ষার্থী রয়েছেন। ১৩ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রও সেখানে থেকেছিল।
সেখানে প্রতিটি কক্ষে একটি করে জানালা আছে। কক্ষের মেঝে কাঠের। একটি ছোট টেবিল আছে। তাতে একটি ডায়েরি, চা খাওয়ার সরঞ্জাম, যোগ ব্যায়ামের ম্যাট রয়েছে। কেউ আতঙ্ক বোধ করলে বা কোনো প্রয়োজনে সাহায্যের দরকার হলে বেল দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। দরজা বাইরে থেকে সব সময় বন্ধ থাকলেও ভেতর থেকে কীভাবে খোলা যায় তা শিখিয়ে দেওয়া হয়।
তবে এমন এক ‘জেলখানা’ খোলার কারণ কী? জানা যাক সেই তথ্য।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় কেওয়ান ইয়ং-সুক নামে এক আইনজীবী প্রচণ্ড কাজের চাপে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। ছয় মাস তিনি প্রতি সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে যান। তাঁর অবস্থা এমন হয়েছিল প্রায় প্রতিদিন তাঁর মনে হতো তিনি আসলে মুক্ত জীবনে নেই। তিনি কারাগারে বন্দী অবস্থায় আছেন। হয়তো কারাগারের জীবনও তাঁর এ অবস্থা থেকে ভালো।
তাঁর এক বন্ধু ছিলেন কারারক্ষী। সেই বন্ধুকে এ কথা জানাতেই তিনি জানান, সত্যিকারের জেলে এসে কিছুদিন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকার জন্য অনুমতি নিতে নানা হ্যাপা সামলাতে হবে। সেখান থেকেই কেওয়ানের ভাবনা আসে জেলের মতো একটা কিছু তৈরি করা যেখানে কাজের চাপে অতিষ্ঠ লোকজন শান্তি খুঁজে পাবেন, অবসাদ থেকে মুক্ত হতে পারবেন।
২০০৮ সালে এই ‘জেলখানা’ খোলার পর সেখানে দুদণ্ড শান্তি খুঁজতে এসেছেন অনেকে। যাঁরা এসেছেন, তাঁদের ২০ ঘণ্টা একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। কেউ ফোনও ব্যবহার করতে পারেন না।
কানাডার সিবিসি নিউজে বলা হয়েছে, অটোপার্টস প্রকৌশলী সুক-ওয়ান ক্যাং (৫৭) অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে এই ‘কারাগারে’ ছিলেন। সেখানে ২৮টি কক্ষ রয়েছে। একেটি রুমের আয়তন পাঁচ মিটার বা প্রায় ৫৪ বর্গফুট। সুক-ওয়ান যে কক্ষে থাকতেন তার নম্বর ছিল ২০৭। কক্ষে প্রবেশের আগে তিনি ফোন জমা দিয়ে দেন। নির্দিষ্ট পোশাক গাঢ় নীল শার্ট ও ঢিলা পায়জামা গায়ে থাকতেন। কক্ষের মেঝেতেই ঘুমিয়েছেন। কক্ষের দরজার নিচ দিয়ে তাঁকে খাবার দেওয়া হতো। কক্ষের ভেতরে একটি কর্নারে ছিল টয়লেট।
৩৫টি দেশের অর্থনৈতিক সহায়তা ও উন্নয়ন সংগঠনের (ওইসিডি) তথ্য অনুসারে, এশিয়ার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার লোকজন সবচেয়ে বেশি কর্মঘণ্টা কাজ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে বিশ্বে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। মেক্সিকোর পরই দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান। দেশটির লোকজন বছরে ২ হাজার ৬৯ কর্মঘণ্টা কাজ করেন। যেখানে ওইসিডিভুক্ত অন্য দেশগুলোতে বছরে গড়ে ১ হাজার ৭৬৪ কর্মঘণ্টা কাজ করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করা এবং দিনে ১৪ ঘণ্টা করে কাজ করা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
অবসাদমুক্তি কেন্দ্রে থাকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে প্রকৌশলী ক্যাং জানান, তিনি সিউলে কিয়া ও হুন্দাই গাড়ি তৈরির কারখানায় সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করেছেন। অতিরিক্ত কাজের চাপের ক্লান্তি থেকে মুক্ত হতে ‘প্রিজন ইনসাইড মি’তে ছিলেন। তিনি যখন সেখানে ছিলেন, তখন সেখানে তাঁর মতো আরও ১৪ জন ছিলেন। তিনি সাত দিন ছিলেন। এর জন্য তাঁকে ব্যয় করতে হয়েছে কোরীয় মুদ্রায় ৫০ লাখ ওয়ান (প্রায় ৩৭ হাজার টাকা)। সাত দিন পর তিনি খুব ফুরফুরে লাগছিল তাঁর। বললেন, ‘আমি খুব তরতাজা বোধ করছিলাম। মনটা হালকা লাগছিল।’ এ নিয়ে তিনি তিনবার সেখানে থেকেছেন বলে জানান।
বাইরের দুনিয়া থেকে সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে অনেকে সেখানে ক্যাংয়ের মতো নিজেকে উপলব্ধি করতে পারেন। অনেকে কক্ষে একাকী হওয়ার পর আবেগে কান্নাকাটি করেন। তাঁরা একধরনের স্বাধীনতা বোধ করেন।
‘প্রিজন ইনসাইড মি’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা জি-হিয়াং নোহ (প্রতিষ্ঠাতা আইনজীবী কেওয়ান ইয়ং-সুকের স্ত্রী) বলেন, ‘এখানে একাকী বন্দী রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য এটা কারাগার নয়। আসল কারাগার হচ্ছে এর বাইরের দুনিয়া।’
দক্ষিণ কোরিয়ায় মাত্রাতিরিক্ত কাজ এখন একটি উদ্বেগের বিষয়ও হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিউলের খ্যাতনামা শ্রম আইনজীবী বংসু জাংয়ের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বয়স ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব অতিরিক্ত কাজ করার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, ‘এখানে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ও পদস্থ কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা করার সংস্কৃতি রয়েছে। কর্মীরা তাঁর বসের কাছে বিশ্বস্ত থাকতে চান। তাই তাঁরা বস যা বলেন তা অবশ্যই মেনে চলার চেষ্টা করেন।’
কয়েক দশক আগেও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য কঠোর পরিশ্রম করাকে জরুরি বলে ধরা হতো দেশটিতে। সেটাই এখন রীতিমতো উৎপাতে পরিণত হয়েছে। সন্তান জন্ম দেওয়ার হার কমে যাওয়া এবং উদ্বেগজনকভাবে আত্মহত্যার হার বাড়ার মতো সামাজিক ব্যাধির জন্য এই অতিরিক্ত কাজ করার প্রবণতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমের বিষয়টি এতটাই উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছে গেছে যে দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন ‘বিশ্রাম নেওয়া অধিকার’ শীর্ষক প্রচারাভিযান শুরু করেছেন গত বছর থেকে। এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে, সপ্তাহে সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা ৬৮ ঘণ্টা থেকে ৫২ ঘণ্টায় নামিয়ে আনা। চূড়ান্ত আইনে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টার সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ওভারটাইমের ব্যাপারটি কীভাবে থাকবে, তা নিয়ে রাজনীতিকদের মধ্যে দর-কষাকষি ও বিতর্ক চলছে।
‘প্রিজন ইনসাইড মি’-এর প্রতিষ্ঠাতা কেওয়ান ইয়ং-সুক বলেন, ‘আমি ভাবতাম, আমি যদি সঙ্গী ছাড়া একা বন্দী থাকতে পারতাম, তাহলে ভালো থাকতাম। অন্তত সেখানে কোনো মানুষ থাকত না, আমার খোঁজের জন্য ফোনগুলো বেজে চলত না, ধূমপান বা মদ্যপান থাকত না। এমন এক কারাগারেই হয়তো শান্তি খুঁজে পেতাম।’
এমন এক কারাগারে যেতে না পারায় নিজের ভাবনা থেকেই কারাগারের আদলে তৈরি করেছেন ‘প্রিজন ইনসাইড মি’। হ্যাপিনেস ফ্যাক্টরি নামে একটি অলাভজনক সংস্থা এটি পরিচালনা করছে। এটা তৈরিতে ব্যয় হয়েছে তিন বিলিয়ন ওয়ান (প্রায় ২২ কোটি ৪১ লাখ টাকা)। ব্যয়ের বেশির ভাগই নিজস্ব অর্থায়ন। বাকিটা এসেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থসহায়তা থেকে। |
e1b13fe8-34a8-4580-b33e-68aaa5f1c39e | যত রোমাঞ্চ, নাটকীয়তার কেন্দ্র এখন বিশ্বকাপ ফুটবল। এ নিয়েই সব উন্মাদনা, পাড়ায়-মহল্লায় আড্ডা, তর্কের ধুম। কে কাকে হারালে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে, কে টিকে থাকবে আর কে নেবে বিদায়—সবাই যখন এই সমীকরণে ব্যস্ত, তাহনিক নূররা তখন অন্য সমীকরণ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করতে বুঁদ হয়ে আছে একদল কিশোর। ঢাকার লালমাটিয়াতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সবকিছু ঠিক থাকলে ৫ জুলাই ছয় কিশোর চড়বে রোমানিয়াগামী বিমানে। একদিকে যখন চলছে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’খ্যাত বিশ্বকাপ ফুটবল, অন্যদিকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড। এ যেন গণিতেরই বিশ্বকাপ! ১১৬টি দেশের ৬১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে এই লড়াইয়ে।
তাহনিকের মতো ছয় শিক্ষার্থীর দেখা মিলল বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি আয়োজিত আইএমও ক্যাম্পে। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের ৫৯তম আসর বসছে রোমানিয়ার ক্লজ-নেপোকা শহরে। সেই অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে দলের ছয় সদস্যের নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। অলিম্পিয়াড কমিটি ও দলের কোচের অনুমতি নিয়ে আমরা ঘুরে আসি আইএমও ক্যাম্প থেকে।
ঢুকতেই চোখে পড়বে বিশাল সাদা বোর্ড, যেখানে দেখা যায় নানা আকারের বৃত্ত আর রম্বসের কাটাকুটি। নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী জয়দীপ সাহাকে দেখা গেল মনোযোগসহকারে বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে। কী করছ? জিজ্ঞেস করতেই বলল, ‘দুপুর থেকে চেষ্টা করছি বৃত্ত আর রম্বসকে এক লাইনে আনতে। কয়েকবার পেরেছি, আর কত উপায়ে অঙ্কের সমাধান করা যায়, ভাবছি।’ সমাধানের পরও সমাধান খুঁজতে হয়, এভাবেই কাটছে বাংলাদেশ গণিত দলের সময়।
বাংলাদেশ দলের সদস্যরা হলো আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী (ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম), রাহুল সাহা (ঢাকা কলেজ, ঢাকা), জয়দীপ সাহা (নটর ডেম কলেজ, ঢাকা), তামজিদ মোর্শেদ (নটর ডেম কলেজ, ঢাকা), তাহনিক নূর (নটর ডেম কলেজ, ঢাকা) ও সৌমিত্র দাস (পুলিশ লাইনস হাইস্কুল, ফরিদপুর)। এই ছয় প্রতিযোগীর দলনেতা হিসেবে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড দলের কোচ মাহবুব মজুমদার এবং উপদলনেতা বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান যাবেন রোমানিয়ায়।
চলতি বছরের আইএমওর জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনের লক্ষ্যে ৩৫টি শহরে আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াড ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াডে ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ী ১ হাজার ৩০০ জনকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় গণিত উৎসব। সেই জাতীয় উৎসবের সেরা ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্দশ বাংলাদেশ জাতীয় গণিত ক্যাম্প। জাতীয় গণিত ক্যাম্প, এশিয়া প্যাসিফিক গণিত অলিম্পিয়াড (এপিএমও) ও আইএমও নির্বাচনী ক্যাম্পের ফলাফলের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশ দল। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় ৫৯তম আইএমওর জন্য ছয়জনের বাংলাদেশ গণিত দল নির্বাচন ও এর আনুষঙ্গিক আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি।
ক্যাম্পের আরেক রুমে দেখা যায় দলের তিন অভিজ্ঞ সদস্যকে, যারা আগেও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়েছিল। আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী, রাহুল সাহা ও তামজিদ মোর্শেদ দলের পুরোনো সদস্য। জাওয়াদ বলে, ‘আগেরবারের চেয়ে এবারের প্রস্তুতি বেশ ভালো। আমি গতবার তিনটি প্রশ্নে সাতে সাত পেয়েছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বাকি তিনটি প্রশ্নে যেন আরও ভালো করি, সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছি।’
ক্যাম্পে দেখা মিলল আগে গণিত অলিম্পিয়াডে পদকজয়ী দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে—আসিফ–ই–ইলাহী ও সাজিদ আখতার । দুজন এখন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছুটিতে দেশে এসেই চলে এসেছেন গণিতের ক্যাম্পে। এবারের প্রতিযোগীদের প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করছেন তারা। আসিফ বলেন, ‘আমরা কীভাবে আইএমওর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তা নতুনদের জানাতে ক্যাম্পে এসেছি। গণিত অলিম্পিয়াডে সমাধান আর উত্তর খোঁজার চেয়ে সমাধান করার প্রক্রিয়ায় কীভাবে সৃজনশীলতা আনা যায়, এ ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।’
জয়দীপ সাহা, তাহনিক নূর ও সৌমিত্র দাস দলে এবারই প্রথম। সৌমিত্র বলে, ‘প্রথমবার দেশের বাইরে যাচ্ছি বলে বেশ রোমাঞ্চ অনুভব করছি। নিশ্চয়ই অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচয় হবে।’ রাহুল সাহা ও তামজিদ মোর্শেদকে দেখা গেল কল্পনায় ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচে কে জিতবে, এই নিয়ে অঙ্ক কষতে। রীতিমতো ছক কেটে, ভেনচিত্র দিয়ে দুজনে নিজ নিজ যুক্তিকে শাণ দিয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি। কত নতুনত্বে বিভিন্ন প্রশ্নের সমাধান করা যায়, তা নিয়ে মধ্যরাত অবধি চলে প্রস্তুতি। মধ্যরাতেও দেখা যায় টিমটিমে আলোতে কেউ খাতায় কাটাকুটি করছে আর একটু দূরে টেলিভিশনে নির্বাকভাবে চলছে ইংল্যান্ড বনাম বেলজিয়ামের খেলা। গণিতপ্রিয় এই ছেলেগুলোর কাছে গণিতের খেলাই তো ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’! |
b6bef8f5-3bd0-4043-a5b7-a31821f3fe50 | - পণ্য রপ্তানি
- লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও সদ্য বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮১।
- রপ্তানি আয় ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ডলার।
সদ্য বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পণ্য রপ্তানির চেয়ে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছর পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের। সেবার প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। বিদায়ী অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় ২ দশমিক ২২ শতাংশ বা ৮৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার কম হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল বুধবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, বরাবরের মতো তৈরি পোশাক রপ্তানির কারণেই সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা বজায় আছে। বিদায়ী অর্থবছরের মোট রপ্তানির ৮৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ পোশাক খাত থেকে এসেছে। কয়েক মাস আগেও মোট পণ্য রপ্তানিতে পোশাক খাতের অবদান ৮১ বা ৮২ শতাংশে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
সব মিলিয়ে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। অন্যদিকে তৃতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের খাত পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি থেকে ৩ হাজার ৬১ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২ হাজার ৮১৪ কোটি ৯৮ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। তার মানে সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছর তার আগের বারের চেয়ে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ বা ২৪৬ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছর পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ ধস নামে। সেবার পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল মাত্র শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। সেই হিসাবে পোশাক রপ্তানি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে পোশাক কারখানাগুলোতে পর্যাপ্ত ক্রয়াদেশ আছে বলে জানিয়েছেন এ খাতের বেশ কয়েকজন শিল্পমালিক।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা পোশাক কারখানার সংস্কারকাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছি। ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স বিভিন্ন সময় বলেছে, আমাদের কারখানাগুলো নিরাপদ ও কমপ্লায়েন্ট। ফলে আমাদের ভাবমূর্তি নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছিল, সেটি দূর হয়েছে। ক্রেতাদেরও আস্থা ফিরেছে। তা ছাড়া সারা বিশ্বের মধ্যে আমরা মান ও সময়মতো পণ্য সরবরাহে বর্তমানে অদ্বিতীয়। সে জন্য পোশাক রপ্তানি ভালো অবস্থায় রয়েছে।’
ইপিবির হিসাবে, বিদায়ী অর্থবছরে ১০৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়া পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের রপ্তানি হওয়া ১২৩ কোটি ডলারের চেয়ে ১২ শতাংশ কম। বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ১৩৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়া পণ্য রপ্তানি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ শতাংশ কম রপ্তানি আয় হয়েছে। রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্পকারখানা সরিয়ে নেওয়ার কারণে রপ্তানিতে তার কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন এ খাতের শিল্পমালিকেরা।
এদিকে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি থেকে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে আয় হয়েছে ১০২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ১৫ কোটি ডলারের কাঁচা পাট, ৬৪ কোটি ডলারের পাটের সুতা, ১২ কোটি ডলারের পাটের বস্তা ও ৬ কোটি ডলারের অন্যান্য পাটপণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল, ৬৭ কোটি ডলার কৃষিজাত পণ্য, ৫০ কোটি ডলারের হিমায়িত খাদ্য ও ৩৫ কোটি ডলারের প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি হয়েছে। |
24032f4e-a94c-455c-9b94-b4535773fb48 | চীনের বৃহৎ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি কিনে নিয়েছে।
বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশের সুপরিচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘দারাজ’ এর একশো ভাগ শেয়ারই কিনেছে আলিবাবা।
দারাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালে পাকিস্তানে। এটি মূলত অনলাইন মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারে। দারাজ পরে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলংকা এবং নেপালেও তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করে।
এটির পেরেন্ট কোম্পানি ছিল রকেট ইন্টারনেট। জার্মান এই কোম্পানিটি মঙ্গলবার জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের পুরো ব্যবসাই তারা আলিবাবা’র কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
বাংলাদেশে আলিবাবা’র মতো ইন্টারনেট জায়েন্টের প্রবেশ নিয়ে অবশ্য স্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ইক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলছেন, বাংলাদেশে যখন ইন্টারনেট স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো মাত্র বেড়ে উঠতে শুরু করেছে, তখন এরকম বৃহৎ কোম্পানিগুলোকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানাতে পারছেন না। কারণ এতে করে স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর বিকাশ ব্যাহত হবে।
উল্লেখ্য দারাজ ছাড়া বাংলাদেশে অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ইন্টারনেট কোম্পানির মধ্যে আছে বিক্রয় ডট কম, আজকের ডিল এবং ফুড পান্ডা। বাংলাদেশ ই-কমার্স এসোসিয়েশনের সদস্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখন ৭৩০।
শমী কায়সার বলেন, ইক্যাবের তরফ থেকে তারা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন যেন কোন বাইরের কোম্পানি বাংলাদেশের কোন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনতে না পারে।
৫১ শতাংশ বা সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ার যেন দেশীয় মালিকানায় থাকে।
ইক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক সভাপতি রাজীব আহমেদ অবশ্য এটিকে অতটা নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ায় ই-কমার্সের বিকাশ ঘটছে বেশ দ্রুত গতিতে। স্বাভাবিকভাবেই এখানে ঢুকতে আগ্রহী হবে আলিবাবা বা আমাজনের মত বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলি।
রাজীব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ই-কমার্স যেভাবে বাড়ছে ২০২০ সাল নাগাদ এটি আট হাজার কোটি টাকার ব্যবসায় পরিণত হবে।তাঁর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ৭০০ কোটি টাকার। ২০১৬ সালে এটি ছিল এক হাজার কোটি টাকা। গত বছর ব্যবসা হয়েছে ১৭০০ কোটি টাকার।
রাজীব আহমেদ বলছেন, দারাজ কিনে নেয়ার মাধ্যমে আলিবাবা এখন রাতারাতি দক্ষিণ এশিয়ায় ই-কমার্সে এক নম্বর স্থানে পৌঁছে গেল।
তিনি বলেন, ভারতে আমাজন আগে থেকেই শক্ত অবস্থানে আছে। কিন্তু ভারত-চীন বৈরি সম্পর্কের কারণেই হয়তো আলিবাবা সেখানে ঢুকতে পারছিল না।
দক্ষিণ এশিয়ার বাজার দখলের জন্য আলিবাবা এবং আমাজনের মধ্যে বড় লড়াইয়ের শুরু হিসেবে দেখছেন তিনি এই ঘটনাকে।
তার মতে, আলিবাবা’র মতো প্রতিষ্ঠান যদি বাংলাদেশে ঢোকে, সেটি ই-কমার্সের ব্যাপারে ভোক্তাদের মধ্য আস্থা তৈরি করতে পারবে।
“আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে মানুষের সেরকম বিশ্বাস বা আস্থা তৈরি হয়নি। শতকরা আশিভাগ ক্ষেত্রেই পেমেন্ট হয় ক্যাশ অন ডেলিভারি’ পদ্ধতিতে। বাইরের বড় কোম্পানিগুলো তাদের প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে এখানে ই-কমার্সের চেহারা পাল্টে দিতে পারে। এবং এ ব্যাপারে ভোক্তাদের আস্থাও বাড়িয়ে দিতে পারে।”
সূত্রঃ বিবিসি |
0f394c12-fcc2-4833-9f27-b110715880de | বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন দেশে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই, আর কোনো দিন রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবেও না।’
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে কোনো দলকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগ করছে না। তাই অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি না করে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো সংকট নেই। তাই অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি করবেন না। উত্তেজনা সৃষ্টি না করে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইনের শাসনের প্রতি আস্থা রাখতে হবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে বেগম খালেদা জিয়ার এই মামলা চলেছে। ২০০৮ সালের জুলাই থেকে মামলা রুজু করার পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা চলেছে। খালেদা জিয়া বা বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কথা যারা বলে তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী না, আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সারাহ বেগম কবরীর সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায়, হিন্দু, বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্ত, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি মোবারক আলী শিকদার, সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। |
9f2c7595-2307-4205-a304-04985dea08de | ৪.০৮। আমার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। প্রকৌশলে পড়ার খুব ঝোঁক ছিল ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু স্বপ্নের বুয়েটে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগই পেলাম না। কীভাবে, কেন, জানি না; সায়েন্সে পড়ার ইচ্ছাটাই চলে গেল। বিষয় পরিবর্তন করতে চাইলাম। আমার মতো মফস্বল এলাকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিকের পর ঢাকায় পড়তে যাওয়ার একটা হিড়িক পড়ে যায়। মনে হয় যেন ঢাকা শহরে না পড়লে এলাকায় আর মুখ দেখানো যাবে না! আমারও একই অবস্থা হয়েছিল। আমি রাজশাহী যেতে চাইনি। যা-ই হোক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বি ইউনিট, অর্থাৎ আইন অনুষদের ফরম তোলা হয়েছিল। পরীক্ষা দিলাম। খুব যে আগ্রহ ছিল তা না।
কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার পর সবার মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের প্রশংসা শুনে শুনে নিজের মনের মধ্যেও সেখানে পড়ার একটা ইচ্ছা তৈরি হলো। ভাইভার ফল প্রকাশের পর দেখলাম, আমি সুযোগ পেয়েছি একটা নতুন বিভাগে—আইন ও ভূমি প্রশাসন। শুরুতে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। ভাবলাম এখানে তো নিশ্চয়ই শুধু ভূমি নিয়ে পড়ানো হবে। আমার বোধ হয় আর বিচারক হওয়া হবে না।
ভুল ভাঙল প্রথম ক্লাসের পরই।
আইন অনুষদে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে নতুন এই বিভাগ খোলা হয়েছে, যার নাম ‘আইন ও ভূমি প্রশাসন’। যত দূর জানি, আমাদের দেশে জুডিশিয়াল সেকশনে যেসব মামলা হয়ে থাকে তার মধ্যে শতকরা ৮৫ ভাগই হয় জমিজমা-সংক্রান্ত। এটি মাথায় রেখেই ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগটি খোলা হয়। শুধু একাডেমিক পড়াশোনাই নয়, বিভিন্ন আইনের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের জন্য আমরা কমিউনিটি রিসার্চও করে থাকি। এটি আমাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, উপভোগ্যও বটে। এর ফলে আমরা বিভিন্ন আইনের খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে পারছি, পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতাও বাড়ছে। আমরা তাঁদের আইন সম্পর্কে সচেতন করতে পারছি।
একটা নতুন বিভাগের পথচলা শুরুর দিকে মসৃণ হয় না। কিন্তু আমরা ভাগ্যবান যে ভীষণ আন্তরিক শিক্ষক পেয়েছি। শুধু পড়াশোনার ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে তাঁরা যেভাবে আমাদের উৎসাহিত করেন, সেটা অনেক বড় পাওয়া। আমাদের যেভাবে পড়ানো হয়েছে, আমার বিশ্বাস, আমাদের ব্যাচের ছেলেমেয়েরা পাস করে বের হয়ে দেশের আইন সমাজে একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
আমরা ছিলাম আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচ। এবার চতুর্থ ব্যাচে ভর্তি হবে আরও কিছু নতুন মুখ (আসনসংখ্যা মাত্র ৫০)। নতুনদের জন্য শুভকামনা রইল।
রিদওয়ান অনিন্দ্য
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় |
ad294d18-9fa6-4fa2-bf36-de5f030b4533 | যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো নিয়ে জোট গঠনের জোর তৎপরতা চালাচ্ছে চীন। এর অংশ হিসেবে চলতি মাসে আরও পরের দিকে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় এক সম্মেলনে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি প্রদানে ইইউকে চাপও দেওয়া হচ্ছে। তবে চীনের এ পদক্ষেপ বাধার মুখে পড়ছে। ইউরোপের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইইউ, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে ইস্পাত আমদানিতে ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ১ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। ইউরোপ থেকে গাড়ি আমদানির ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি চীনা পণ্যের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয় ইইউ ও চীন।
চীনের বেইজিংয়ে ১৬-১৭ জুলাই সিনো-ইউরোপীয় সম্মেলন সামনে রেখে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসসহ বিভিন্ন স্থানে ইইউর নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠকে দুই অর্থনৈতিক শক্তিধরের মধ্যে একটি জোট গঠন এবং ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়ানোর অংশ হিসেবে বেশি করে চীনা বাজার গড়ার প্রস্তাব দেন তাঁরা। বৈঠকে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হি ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ইও ছিলেন।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চীন ও ইইউর যৌথ পদক্ষেপ শুরু করার একটি প্রস্তাবও রয়েছে। তবে ইইউর পাঁচ কর্মকর্তা ও কূটনীতিক বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য গোষ্ঠী ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে গিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে জোট বাঁধার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এরপরও সিনো-ইউরোপীয় সম্মেলন থেকে একটি ন্যায়সংগত ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হতে পারে। ঘোষণাপত্রে বহুপক্ষীয় বাণিজ্য-ব্যবস্থায় উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করা এবং ডব্লিউটিওর আধুনিকীকরণ একটি কর্ম কমিটি গঠনের প্রতিশ্রুতি থাকবে।
চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হি বলেন, আসন্ন সম্মেলনে প্রথমবারের মতো কিছু পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে চীন, যেটি ইউরোপীয় বিনিয়োগ মুক্ত করতে পারে। ওই সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, প্রধানমন্ত্রী লি কেছিয়াং ও ইইউর শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ইইউকে কাছে টানার অংশ হিসেবে চীনের গণমাধ্যমগুলোয় প্রচার হচ্ছে, ইইউ চীনের পাশে রয়েছে। যদিও দক্ষিণ চীন সাগর ও বাণিজ্য বিতর্কে মতভেদের কারণে ২০১৬ ও ১৭ সালে আগের দুই সম্মেলন শেষ হয় বিবৃতি ছাড়াই।
একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ইইউকে পাশে চায় চীন। আমরা এটা করতে চাই না এবং আমরা তাদের সেটা জানিয়েছি।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেইজিং সম্মেলনের এই রকম উদ্দেশ্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে বুধবার চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ায় এক মতামতে বলা হয়েছে, ‘চীন ও ইইউকে হাতে হাত রেখে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ রোখা উচিত। চীন ও ইউরোপীয় দেশগুলো প্রকৃত অংশীদার। তারা প্রবলভাবে বিশ্বাস করে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য মুক্তবাণিজ্য একটি শক্তিশালী পন্থা। |
c06db1c9-fc01-4b92-894e-afe322ef4b56 | জার্মানি, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল ও স্পেনের বিদায়ে অনেকটাই বিবর্ণ রাশিয়া বিশ্বকাপ। ধীরে ধীরে ফুটবল ভক্তদের উন্মাদনাও অনেকটা ঝিমিয়ে এসেছে। তবে ব্রাজিল এখনো এ বিশ্বকাপের প্রাণ হয়ে রয়েছে। মেক্সিকোর বিপক্ষে শেষ ষোলতে ২-০ গোলে জয় নিয়ে শিরোপার পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেল ব্রাজিল। বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের ফুটবল উচ্ছ্বাসও বেঁচে রয়েছে ব্রাজিলকে ঘিরেই। বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া মনে করেন সব দিক থেকে এগিয়ে থাকা ব্রাজিল খেলতে পারে ফাইনাল।
তিনি বলেন, দেখেন প্রায় সব বড় দলই বিদায় নিয়েছে। তবে এখনো ব্রাজিল টিকে রয়েছে। তারা সব দিক থেকে দারুণ ফুটবল খেলছে। যদিও এখন পর্যন্ত তাদের চারটি ম্যাচ দেখেন ব্রাজিল কিন্তু গোল খেয়েছে মাত্র একটা। তার মানে ওদের ডিফেন্স অসাধারণ। বেলজিয়াম যে খুব সহজ প্রতিপক্ষ হবে তা নয়। ওরাও দারুণ খেলছে। তবে এখন ব্রাজিলের এই ডিফেন্স ভেঙে কতোটা সফল হবে- সেটি দেখার বিষয়। আমি মনে করি এ আসরে ব্রাজিলের সম্ভাবনা অনেক বেশি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, যে কোনো দলের জন্য ব্রাজিল কঠিন প্রতিপক্ষ।
ক্লাব ফুটবলের বড় প্রভাব
রাশিয়া বিশ্বকাপকে জামাল ভূঁইয়া দেখছেন অঘটনের আসর হিসেবে। কারণ বড় দলগুলোর বিদায় ছিল করুণ। এর কারণ হিসেবে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, বিশ্বের যতগুলো বড় দল রয়েছে তাদের তারকা ফুটবলারা পৃথিবীর বিভিন্ন ক্লাবে খেলে। এটাতে কি হয়েছে ওদের শক্তি সামর্থ্যগুলো এখন সবার জানা। বিশেষ করে এবার ছোট দলগুলো কিন্তু সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করে এসেছে। যে কারণে দেখেন ওরা রক্ষণ ভাগ শক্তিশালী রেখেছে। আর বড় দলের তারকাদের মার্ক করে রেখেছে যেন সুযোগ বেশি না পায়। আবার দেখেন আর্জেন্টিনা মেসি, মাসচেরানো, ডি. মারিয়া ও আর কয়েক জন ছাড়া বেশির ভাগই খেলোয়াড়ই বিশ্বের কোন ক্লাবে খেলে না। পর্তুগালেরও একই অবস্থা।
জার্মানি-স্পেনের করুণ বিদায়
এ বিশ্বকাপে জার্মান ও স্পেনের বিদায় ছিল সবচেয়ে করুণ। তাদের এমন ধসের কারণ হিসেবে জামাল ভূঁইয়া বলেন, জার্মানির ফর্ম এবার তেমন ভালো ছিলো না। তারা যে দল হিসেবে খেলে সেটিই এবার ছিল অদৃশ্য। বড় বড় তারকাদের মধ্যে সমন্বয়টা ছিল একেবারেই কম। যে কারেণ প্রথম রাউন্ডেই তাদের ফিরতে হয়েছে বাজে ভাবে। এছাড়া স্পেনের কথা বলেন! লাতিন ফুটবলের সৌন্দর্যই ওরা। ওদের ফুটবল খেলা দেখে মানুষ মুগ্ধ। কিন্তু ধিরে ধিরে ওদের কৌশলগুলো সবাই বুঝতে পেরেছে। স্পেন কিন্তু বেশি গোল করে খেলে না। ওদের এ কৌশলগুলো এতোটাই ওপেন সিক্রেট যে, সব দলই তাদের আটকানোর কৌশল বের করে নিয়েছে।
দলের কারণেই মেসি-রোনালদোর হতাশা
রাশিয়া বিশ্বকাপে একই রাতে বিদায় নিয়েছেন ফুটবল বিশ্বের দুই মহাতারকা। তাদের এ করুণ বিদায়ের জন্য বাংলাদেশের অধিনায়ক দায়ি করছেন দলকে। তিনি বলেন, সেমি ও রোনালদোর বিদায়ের একটাই কারণ তাদের ‘দল’। আর্জেন্টিনাতো মেসির সঙ্গে তাও ডি মারিয়া, আগুয়েরা, হিগুয়েনরা ছিল। কিন্তু রোনালদোকে কে সাপোর্ট করেছে বলেন? তবে রোনালদো বিশ্বকাপে মেসির চেয়ে এগিয়ে ছিল। ৪ গোল করেছে। একাই দলকে জিতিয়েছে।
নতুন কোনো দলের বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ
এবার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হবে কোন দল! অনেকের ধারণা নতুন কোন দলের হাতেই উঠবে শিরোপা। কিন্তু জামাল ভূঁইয়া মনে করেন নতুন কোনো দল নয় বিশ্বকাপের ট্রফি উঠতে পারে পুরনোদের হাতেই। তিনি বলেন, আমার মনে হয়না নতুন কোন দল শিরোপা নিবে। আমি মনে করি ব্রাজিল, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের দারুণ সম্ভাবনা আছে।
কুটিনহো-এমবাপ্পেতে মুগ্ধতা
মেসি, রোনালদো বিদায় নিয়েছেন। নেইমার এখনো নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। যদিও তার দল কোয়ার্টার ফাইনাল খেলছে। তবে তাদেরকে ছাড়াও ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ব্রাজিলের কুটিনহোর উপরও এবারের স্পট লাইট রয়েছে বলেই জানালেন জামাল। তিনি বলেন, মেসি-রোনালদোর কথা বলে আর লাভ নেই। নেইমার যতোটা ভালো করার কথা ছিল এখনো ততোটা পারেননি। তবে এবারের স্পট লাইট যদি বলেন তাহলে আমি বলবো ব্রাজিলের কুটিনহো ও ফ্রান্সের এমবাপ্পের উপরই রয়েছে। সামনে আরো ম্যাচ আছে আশা করি দারুণ কিছুই উপহার দিবে তারা।
অনুলিখন: ইশতিয়াক পারভেজ |
65b07a45-4558-483a-befe-ae48fbae2a3c | হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় কেটে রাখা টাকা ফেরত আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সোনালী ব্যাংক। এ ঘটনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকে অন্য ব্যাংকের পাওনা হিসাবে ৮৯২ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই টাকার একটি অংশ ফেরত পেতেই সোনালী ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটি করেছে।
হল-মার্কের বড় এই আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনাটি সোনালী ব্যাংকের রাজধানীর রূপসী বাংলা শাখায় সংঘটিত হয়েছিল। মামলায় হল-মার্ক গ্রুপের কর্ণধার, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও অন্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আল-আরাফাহ্, এবি ও সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলিয়ে ৪৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানদের আসামি করা হয়। মামলায় ৪১-৪৩ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, বৈদেশিক মুদ্রানীতি এবং ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপককে।
গতকাল ঢাকার যুগ্ম জজ প্রথম আদালতে মামলাটি করে সোনালী ব্যাংক। মামলার নম্বর ২০। সোনালী ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী হোসনে আরা বেগম এ মামলা করেন। আর মামলাটি তদারকির দায়িত্বে আছেন রূপসী বাংলা শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবদুছ ছালাম।
মামলার পর সোনালী ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ভুয়া ঋণপত্রের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের তদন্তেই বেরিয়ে এসেছে। সোনালী ব্যাংকের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা কেটে অন্য ব্যাংকগুলোকে দিয়েছে। তবে তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, জালিয়াতি প্রমাণ হলে টাকা ফেরত দেবে অন্য ব্যাংকগুলো। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এমন আরও মামলা হবে। রায় পক্ষে এলে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ফেরত পাবে সোনালী ব্যাংক।
ব্যাংক সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংকের আপত্তি সত্ত্বেও তাদের হিসাব থেকে বিভিন্ন ব্যাংককে ১০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার (৮৯২ কোটি টাকা) দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের স্বীকৃত বিলের বিপরীতে নন-ফান্ডেড দায় তৈরি হওয়ায় অন্য ব্যাংকগুলোকে এসব অর্থ পরিশোধ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকেই এ টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু সোনালী ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তেই এসেছে এটা জালিয়াতি, তাই হিসাব থেকে টাকা কাটার সিদ্ধান্ত বেআইনি।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ৪১-৪৩ নম্বর বিবাদীরা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) জাল-জালিয়াতিপূর্ণ ঋণপত্র ও কথিত স্বীকৃত বিলের বিপরীতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দায়ের করা অভিযোগ তদন্তাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকে ব্যাংকগুলোকে টাকা পরিশোধ করেছেন। গতকালের মামলায় আল-আরাফাহ্, এবি ও সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে ১১ কোটি ৭৮ লাখ ৪ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখাটি তদারকি করত, তাহলে এ দেশের সর্ববৃহৎ ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটত না। এরপরও তারা হিসাব থেকে টাকা কেটে অন্য ব্যাংককে পরিশোধ করেছে। এ জন্য তারা কেটে রাখা টাকা সুদসহ ফেরত দিতে বাধ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জালিয়াতির বিলের টাকা কেটে পরিশোধ না করার জন্য সোনালী ব্যাংক দফায় দফায় অনুরোধ করলেও তা বিবেচনা করা হয়নি। সোনালী ব্যাংক এসব টাকা আদায়ে বিবাদীদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে নিলামের মাধ্যমে টাকা আদায়ের অধিকার সংরক্ষণ করে।
মামলায় বলা হয়, একটি ট্রাকে করে চালানের মাধ্যমে ৩০ মেট্রিক টন সুতা পরিবহনের হিসাব দেখানো হয়েছে, যা বাস্তবে সম্ভব নয়। এতেই প্রমাণিত হয় পুরো প্রক্রিয়াটি জাল-জালিয়াতিপূর্ণ।
এতে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ৫ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখাটি পরিদর্শন করে। এরপর তাদের বিশেষ পরিদর্শনে হল-মার্ক গ্রুপের ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি বেরিয়ে আসে। |
TituLM Bangla Corpus
TituLM Bangla Corpus is one of the largest Bangla clean corpus prepared for pretraining, continual pretraining or fine-tuning Large Language Model(LLM) for improving Bangla text generation capability. This dataset contains diverse sources and categories of Bangla text. The largest part of this dataset contains filtered common crawled datasets. As we saw existing all common crawl datasets have issues with proper text extraction from HTML pages and Bangla language specific filtering as all those datasets build for multilingual purposes. Keeping that in mind we applied Trafilatura tool to extract text from common crawl web pages. Compared to existing extraction pages we found this tool perform better. We generate several Bangla language specific quality signals over the dataset and filtered using different quality signals threshold. We also prepared a fine-tuned NLLB model to translate English text to Bangla, and Bangla text to Romanized. We are hoping this dataset contributes to the Bangla research community to buidl more enhance and improved Bangla language model.
Getting Started
To download full datasets:
from datasets import load_dataset
dataset = load_dataset("hishab/titulm-bangla-corpus")
To download a subset:
from datasets import load_dataset
dataset = load_dataset("hishab/titulm-bangla-corpusa", data_dir="<subset_name>")
# example
# dataset = load_dataset("hishab/titulm-bangla-corpusa", data_dir="common_crawl")
Datasets Summary
TituLM Bangla Corpus contains three different categories:
- Common Crawl:
- Filtered: Contains Common Crawl filtered data. We downloaded the common crawl dump using Athena(Amazon) by Bangla language and language-specific keywords. Then we extract text using Trafilatura which is good tool for web text extraction. We applied several filtering methods. This is the cleanest version of the datasets.
- Translation: Contains Bangla-translated data from English news articles. We used a fine-tuned NLLB model to translate the datasets. In our observation, the fine-tuned nllb model performs better than Google or other available translators. We generated the fine-tuned data using GPT-4 and GPT-4o models.
- Romanized: Contains transliterated Bangla data from Bangla common crawl and news articles. We used a fine-tuned NLLB model to translate the datasets. We generated the fine-tuned data using GPT-4 and GPT-4o models.
Datasets Statistics
- Document counts: Document count describe the total number of document or web pages or page text. For example a news article web page.
- Word Counts: Number of total words counted by basic tokenizer.
- Token Counts: We trained a Tiktoken tokenizer with a large chunk of Bangla text. Here token counts describe the number of tokens counted by https://huggingface.co/hishab/titulm-llama-3.2-3b-v2.0 tokenizer. This tokenizer contains the original Llama 3.1 tokenizer extended with 48k Bangla tokens.
Category | Total Documents (In Millions) | Total Words (In Billions) | Total Tokens (In Billions) |
---|---|---|---|
Common Crawl Filtered | 24.3 | 9.94 | 14.80 |
Translated | 1.74 | 1.08 | 1.47 |
Romanized | 5.17 | 1.89 | 3.87 |
Total | 31.21 | 12.91 | 20.14 |
Datasets Preparation in Details
Common Crawl
- We used Amazon Athena to query the common crawl datasets. We query by content language, URL host TLD, and dumped the query results.
- We used Trafilatura for extracting text from the query-separated common crawl web HTML pages. We found out that Trafilatura works better to extract text from web HTML pages.
- We generated different quality signals like document word counts, character counts, sentence counts, line ending with terminal punctuations, adult content, etc. We generated a total of 20 quality signals for each document.
- In the final steps, we set a threshold for each quality signal followed by Gopher rule, like word count must be between 50 to 10000, is adult false, sentence count greater than 5, etc. We applied those quality signal thresholds and separated the documents in pass and failed.
- According to our filtering passed percentage 36.76% and failed 62.54%
Translated
- We prepared custom English-to-Bangla translation datasets using OpenAI GPT-4, and GPT-4o models and reviewed the datasets by human annotator.
- We fine-tuned the NLLB model with that dataset and our eval results show promising results on test datasets. Compared to Google Translate our fine-tuned translation seems more natural. We are hoping to publish the model soon.
- Finally, we selected an English newspaper dataset and translated the full dataset to Bangla using the fine-tuned model.
Romanized
- We prepared custom Bangla-to-Romanized Bangla datasets using OpenAI GPT-4, and GPT-4o models and reviewed the datasets by human annotator.
- We fine-tuned the NLLB model with that dataset and our eval results show promising results on test datasets. We are hoping to publish the model soon.
- Finally, we romanized a selected common crawl Bangla dataset using the fine-tuned model.
Citation
@misc{nahin2025titullmsfamilybanglallms,
title={TituLLMs: A Family of Bangla LLMs with Comprehensive Benchmarking},
author={Shahriar Kabir Nahin and Rabindra Nath Nandi and Sagor Sarker and Quazi Sarwar Muhtaseem and Md Kowsher and Apu Chandraw Shill and Md Ibrahim and Mehadi Hasan Menon and Tareq Al Muntasir and Firoj Alam},
year={2025},
eprint={2502.11187},
archivePrefix={arXiv},
primaryClass={cs.CL},
url={https://arxiv.org/abs/2502.11187},
}
- Downloads last month
- 32